নারীদের নেতৃত্বে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে প্রথমবারের মতো যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের সুজলপুর গ্রামে। এই পূজা আয়োজিত হচ্ছে শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার সদস্যদের নেতৃত্বে।
এটি নারীদের নেতৃত্বে প্রথম পূজা এটি যশোরের পূজার ইতিহাসে। একই সঙ্গে পুরোহিতসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই দলিত যেটি সনাতন সমাজের প্রথা ভেঙে নতুনের দিকে যাত্রা। নমঃশুদ্র, পৌন্ড্র ক্ষত্রিয়, ঋষি, জেলে, ডোম, হেলা, পাটনী কায়পুত্র, বাগদী, খাসি, বুনো, সরদার, কর্মকার, নানা সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া মানুষদেরকে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রভাবশালীরা তাদেরকে যেমন কোথাও স্থান দেয় না, একই সঙ্গে সম্মানও দেয় না।
আবার দলিত নারীদেরও ঘরের বাইরে বের হতে দেয় না তাদের সম্প্রদায়ের পুরুষেরা। ফলে নিন্ম শ্রেণিতে অবস্থান করে তারা নিন্ম জাতেরও। সেজন্য শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার নারীদের উদ্যোগে ও নেতৃত্বে পূজার এই ইতিহাস তৈরির আয়োজন বলে জানান পূজা কমিটিতে থাকা দলিত নারীরা। ১০ সদস্যের ১০ জনই নারী পূজা উদযাপনের জন্যে গঠিন। এর আগে এমনটা কখনও হয়নি যশোরের পূজা উদযাপনের ইতিহাসে।
আয়নামতি বিশ্বাস শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার শারদীয় দুর্গোৎসবের সভাপতি জয়ন্তী রানী দাস ও সাধারণ সম্পাদক। আরতি দাস কোষাধাক্ষ্যের দ্বায়িত্বে আছেন।
পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আয়নামতি বিশ্বাস বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছি আমার বয়স ৩৫ অথচ আমিই প্রথম দলিত নারী। এর পরেও অল্প কয়েকজন দলিত নারী শিক্ষিত হতে পেরেছে। অথচ ৮০০ জন দলিতের বাস এখানে প্রায়। কেবল আমাদের মেয়েরাই নয়, ছেলেরাও শিক্ষা ও অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে। এজন্য অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে আমরা নারীরা এগিয়ে এসেছি। এই আমাদের অবহেলিত জীবনের পরিবর্তনের ধাপ আমরা পরিবর্তন ঘটাতে পারবো ধাপ হচ্ছে দুর্গাপূজা, দুর্গা মায়ের আর্শীবাদে এবার থেকে । শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার পূজা আয়োজনে পুরোহিতের দ্বায়িত্ব পালন করা নীলরতন দাস বলেন, আমি নিজেও দলিত সম্প্রদায়ের। ব্রাহ্মণদের কাছ থেকে বাধা পেতাম আমরা পূজা শুরু করলে। পরিবর্তন হয়েছে সে অবস্থার। আরও নীচের স্তরে আছে দলিত নারীরা সমাজের। তাদের নেতৃত্বে এই পূজা তাদেরকে মর্যাদার আসনে বসাবে। আমি গর্বিত এই পূজার দ্বায়িত্ব পেয়ে।