দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল হককে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত এক আসামিকে ফাঁসি এবং তার বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে। জেলার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহিম এ রায় প্রদান করেন বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আবু সাঈদ ইমাম আদালতের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানা এবং অনাদায়ে অতিরিক্ত এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের সাজা প্রদান করা হয় প্রদত্ত রায়ে।
মানিক পলাতক ছিলেন রায় প্রদানের সময় ফাঁসি প্রাপ্ত আসামি। তবে তার বাবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি নূরুল করীম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের গাবুরগাও গ্রামে আসামিদের বাড়ি। মামলার বিবরণে জানা যায়, হত্যার শিকার আমিনুল হকের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মহিষজোড়া গ্রামে। হোসেনপুরে জিনারী গ্রামে একটি দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরি সূত্রে বসবাস করতেন তিনি।
আমিনুল হকের ছেলে রক্সি প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার সময় ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিরোধ বাধে ২০০৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবক মানিক রক্সিকে মারধর করে বাড়িতে নিয়ে বেঁধে রাখে। রক্সির বাবা আমিনুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জানতে চান খবর পেয়ে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হলে মানিক ও তার বাবা নূরুল করীম আমিনুল হকের ওপর হামলা চালায়। মানিক ধারালো ছুরি দিয়ে আমিনুল হকের বুকে আঘাত করে এক পর্যায়ে।
এতে আমিনুল হক গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদরে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১৭ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয় চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ফজলুল হক বাদী হয়েচারজনকে আসামি করে হোসেনপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে দুজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে।